• রবিবার, ১৯ মে ২০২৪, ০৪:৫৭ পূর্বাহ্ন |
  • Bangla Version
নিউজ হেডলাইন :
করোনা শনাক্তের হার ১৫ শতাংশের বেশি, মৃত্যু ১ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার  অভয়নগরে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তি বাস্তবায়ন ও মনিটরিং সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ অভয়নগরে সরকারীভাবে ধান চাল সংগ্রহের উদ্বোধন অভয়নগরে মেধা অন্বেষন ও কুইজ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত অভয়নগরে দুদক কর্তৃক সততা স্টোরের অর্থ ও শিক্ষা উপকরণ বিতরণ আশুলিয়া টু চান্দুরা চৌরাস্তা যানজটের দুর্ভোগ,,,  অভয়নগরে মাধ্যমিক পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠান প্রধানকে সংবর্ধনা যশোর গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)অভিযান চালিয়ে ৪ বোতল বিদেশী মদ উদ্ধার সহ আটক -১ অভয়নগরে পায়রাহাট ইউনাইটেড কলেজ শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বীকৃতি অর্জনে আনন্দ শোভাযাত্রা নড়াইলের ইউপি চেয়ারম্যান  মোস্তফা কামাল’কে গুলি করে হত্যাকান্ডের ঘটনায় আটক -৪ সুষ্ঠ ভোটে ডিজিটাল পদ্ধতি দরকার আশুলিয়ায় ২৪ ঘণ্টায় ছয় জনের মরদেহ উদ্ধার ডিবি কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যা বললেন মামুনুল হক যুক্তরাষ্ট্র সিরিজ খেলা হচ্ছে না তাসকিনের, বিকল্প ভাবনায় হাসান দুই সিনেমা নিয়ে ফিরছেন আফরান নিশো

জলবায়ু পরিবর্তনে ধুঁকছে সুন্দরবন

Sundari tree (Heritiera fomes) forest in Sunderbans river delta. The Sundarbans mangrove forest, one of the largest such forests in the world and it is an Unesco World Heritage Site. These mangrove forest/swamps are home to famous Royal Bengal tiger. During high tide, most of the area remains submerged in saline river water.

সুন্দরবনের কাছে ক্ষমা চাইলেন তারা

নিজস্ব প্রতিবেদক : ১৪ ফেব্রুয়ারি ছিলো ‘সুন্দরবন দিবস’। সুন্দরবনসংলগ্ন উপকূলীয় জেলায় গত ২০০২ সাল থেকে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করা হচ্ছে। করোনার কারণে বিগত বছরের মতো এবারও বাগেরহাট, খুলনা, পিরোজপুর, সাতক্ষীরা ও বরগুনায় ভার্চুয়ালি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়েছে।
তবে ২১ বছরেও জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের আহ্বানে সাড়া মেলেনি। সুন্দরবন দিবস পালনের আয়োজকরা প্রথম থেকেই জাতীয় ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের দাবি জানিয়ে আসছেন।
দেশের সর্ব দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের অববাহিকায় গড়ে উঠেছে বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবন। সুন্দরবনকে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি বলা হয়। সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে ভরপুর। সুন্দরবনের অপরূপ সৌন্দর্য যেন ভ্রমণপিপাসুদের হাতছানি দিয়ে ডাকে।
তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ধকলে ও মানুষের অত্যাচারে দিনদিন প্রাণ হারাচ্ছে ইউনেস্কো ঘোষিত এই ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট। বিপন্ন হচ্ছে এখানকার বনজ ও প্রাণীজ সম্পদ।
সারা বছরজুড়ে দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকৃষ্ট করে চলেছে সুন্দরবন। বাঘ মামাখ্যাত দেশে ‘রয়েল বেঙ্গল টাইগারের’ আবাসস্থলও সুন্দরবনে। সুন্দরবন প্রাকৃতিক দুর্যোগের বিরুদ্ধে প্রাকৃতিক দেয়াল হিসাবে দাঁড়িয়ে আছে। বিভিন্ন সময়ে সুপার সাইক্লোনে নিজে ক্ষতবিক্ষত হয়ে উপকূলবাসীকে রক্ষা করে চলেছে সুন্দরবন। সুন্দরবন বিশ্বের একক বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, পানি প্রবাহ না থাকায় সুন্দরবনের ভিতর ছোট-বড় বেশকিছু খালের তলদেশে পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। মাঝে মধ্যে বাঘ, হরিণসহ বিভিন্ন ধরণের বন্যপ্রাণী সুন্দরবন ছেড়ে খাল পাড়ি দিয়ে বনসংলগ্ন লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। মাঝেমধ্যে লোকালয়ে এসে প্রাণ হারাচ্ছে বন্যপ্রাণী।
সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন জানান, সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের আওতাধীন এলাকায় ২০টির উপর খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে গেছে। এছাড়া জয়মনি থেকে দাসের ভারানী পর্যন্ত ভোলা নদী, খড়মা খাল এবং আড়য়ারবেড় খালের ৩০ কিলোমিটার এলাকা ভরাট হয়ে গেছে। সুন্দরবনের মধ্যে লবণাক্ততাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
খুলনার বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন জানান, ২০০১ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি খুলনায় প্রথম জাতীয় সুন্দরবন সম্মেলন ‘সুন্দরবন ঘোষণার’ মধ্যে দিয়ে শেষ হয়। রূপান্তর, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাপাসহ ৭০টি সংগঠন যৌথ ভাবে ওই সম্মেলনের আয়োজন করে।
সম্মেলনে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন। ওই সম্মেলনে ১৪ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় এবং জাতীয়ভাবে ‘সুন্দরবন দিবস’ পালনের দাবি জানানো হয় সরকারের কাছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সাড়া মেলেনি।
২০০২ সাল থেকে সুন্দরবনসংলগ্ন জেলাগুলোতে সুন্দরবন একাডেমি, সুন্দরবন বিভাগ, বিভিন্ন প্রেসক্লাব ও বিভিন্ন সংগঠন ১৪ ফেব্রুয়ারি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করে আসছে।
নির্বাহী পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম খোকন আরো জানান, বিশ্ব ভালবাসা দিবসে ‘সুন্দরবনকে ভালবাসুন’ এই শ্লোগানকে সামনে রেখে এবছর ১৪ ফেব্রুয়ারি ভার্চুয়ালি ‘সুন্দরবন দিবস’ পালন করা হবে। এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে, ‘সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর বিকল্প কর্মসংস্থান’।
সুন্দরবন একাডেমির নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সুন্দরবনে লবণাক্ততা বেড়ে চলেছে। মিঠা পানির উৎস কমে গেছে। বনের মধ্যে বেশকিছু খাল পলিমাটি জমে ভরাট হয়ে আছে এবং বিভিন্ন এলাকায় চর পড়ে গেছে।
তিনি আরও জানান, সুন্দরবনে লবণপানির আধিক্য বেশি। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে সুন্দরীসহ বিভিন্ন গাছ নানা রোগে মারা যাচ্ছে। লবণ পানি খেয়ে বন্যপ্রাণী নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। সুন্দরবনের জৈববৈচিত্র্য হুমকির মুখে।
নির্বাহী পরিচালক আনোয়ারুল কাদির আরো জানান, তারা সুন্দরবন সংরক্ষণ এবং বনসংলগ্ন মানুষের জীবনজীবিকার মান উন্নয়নের জন্য সুন্দরবন পরিচালনার ক্ষেত্রে পৃথক মন্ত্রণালয় গঠনের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের দাবি পূরণ হলে বন এবং বনসংলগ্ন মানুষের ভাগ্যের উন্নয়ন ঘটবে বলে তিনি আশাবাদী।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে নানা ভাবে সুন্দরবন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। বনের নদী-খালে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে। মিঠা পানির উৎস কমে আসছে। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে বনের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জীবিকার জন্য বনের উপর মানুষের চাপ রয়েছে। বন রক্ষায় বনসংলগ্ন স্থানীয় জনগণকে সম্পৃক্ত করতে হবে। সুন্দরবন রক্ষায় সরকার নানা উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করছে বলে তিনি জানান।
প্রধান বন সংরক্ষক মো. আমীর হোসাইন চৌধুরী আরো জানান, বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে জাতীয় ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের দাবি তোলা হয়েছিল। কিন্তু এখনো জাতীয়ভাবে সুন্দরবন দিবস পালনের সিদ্ধান্ত হয়নি।
সুন্দরবনের ইতিহাস: সুন্দরবনের মোট আয়তন ছয় হাজার ১৭ বর্গ কিলোমিটার। এর মধ্যে স্থলভাগের পরিমাণ চার হাজার ১৪৩ এবং জলভাগের পরিমাণ এক হাজার ৮৭৩ বর্গ কিলোমিটার।
অষ্টাদশ শতাব্দীতে সুন্দরবনের আয়তন ছিল বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। ১৮৭৮ সালে সুন্দরবনকে সংরক্ষিত বন হিসাবে ঘোষণা করা হয়। জাতিসংঘের ইউনেস্কো কমিশন ১৯৯৭ সালে সুন্দরবনের তিনটি অভয়ারণ্যকে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা হিসাবে ঘোষণা করেন। ২০১৭ সালে সরকার সুন্দরবনে অভয়ারণ্য এলাকা সম্প্রসারণ করে। মোট ছয় লাখ এক হাজার ৭০০ হেক্টর বনের মধ্যে এখন তিন লাখ ১৭ হাজার ৯০০ হেক্টর অভয়ারণ্য এলাকা। আগে ছিল মাত্র এক লাখ ৩৯ হাজার ৭০০ হেক্টর।
সুন্দরবন জীববৈচিত্র্যে সমৃদ্ধ একটি ইকোসিস্টেম। সুন্দরবনের পুরো এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে মনোরম দৃশ্য। এই বনে অসংখ্য উদ্ভিদ ও প্রাণীর উত্তম আবাসস্থল। ২০০১ সালে সুন্দরবনের প্রশাসনিক এলাকা দুটি ভাগে ভাগ করা হয়। পূর্ব বন বিভাগের কার্যালয় বাগেরহাটে ও পশ্চিম বিভাগের কার্যালয় খুলনায় অবস্থিত।
সুন্দরবনের নামকরণ: সুন্দরবনের প্রধান উদ্ভিদ প্রজাতি ‘সুন্দরী গাছ’। কারো কারো মতে সুন্দরী গাছের নাম অনুসারে প্রাকৃতিক ভাবে গড়ে ওঠা বনের নাম হয়েছে সুন্দরবন। আবার সমুদ্রের কাছে অবস্থান হওয়ায় ‘সমুন্দর’ শব্দ হয়ে প্রথমে ‘সমুন্দবন’ ও পরে ‘সুন্দরবন’ নামকরণ হয়েছে বলে অনেকে মনে করেন।
লবণাক্ততা: সুন্দরবনের পূর্ব থেকে পশ্চিমে এবং উত্তর থেকে দক্ষিণে লবণাক্ততার পরিমাণ পর্যায়ক্রমে বেশি। সুন্দরবনের সর্বোত্র মাটির লবণাক্ততার পরিমাণ ২-৪.৫ ডিএস/এম। তবে শুষ্ক মৌসুমে মাটিতে লবণাক্ততার পরিমাণ ছয় ডিএস/এম মধ্যে থাকে। পানির লবণাক্ততার উপর নির্ভর করে সুন্দরবনকে তিন ভাবে ভাগ করা হয়েছে, স্বাদু পানির অঞ্চল,মধ্যম লবণাক্ত পানির অঞ্চল এবং লবণাক্ত পানির অঞ্চল।
জীববৈচিত্র্য: সুন্দরবনে জৈববৈচিত্র্যে ভরপুর। সুন্দরবনে ৩৩৪ প্রজাতির গাছপালা, ১৬৫ প্রজাতির শৈবাল ও ১৩ প্রজাতির অর্কিড রয়েছে বলে বন বিভাগ জানান।
বনজ দ্রব্য: সুন্দরবনের প্রধান বনজ দ্রব্য হচ্ছে, সুন্দরী, পশুর, গেওয়া, ধুন্দুল ও কাঁকড়া গাছ। এছাড়া গোলপাতা, হেতাল, ছন, মাছ, মধু ইত্যাদি সুন্দরবনে রয়েছে।
প্রাণী: দেশের মধ্যে বন্যপ্রাণীর বৃহত্তম আবাসস্থল সুন্দরবন। সুন্দরবনে ৩৭৫ প্রজাতির অধিক বন্যপ্রাণী রয়েছে। এর মধ্যে ৩৫ প্রজাতির সরীসৃপ, ৩১৫ প্রজাতির পাখি ও ৪২ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী অন্তর্ভুক্ত। ২১০ প্রজাতির সাদা মাছ, ২৪ প্রজাতির চিংড়ি, ১৪ প্রজাতির কাঁকড়া এবং ৪৩ প্রজাতির মলাস্কা রয়েছে সুন্দরবনে।
বন্যপ্রাণী: সুন্দরবনের প্রধান প্রধান বন্যপ্রাণী হচ্ছে, রয়েল বেঙ্গল টাইগার, চিত্রল হরিণ, বন্য শূকর, বানর, কুমির, ডলফিন, কচ্ছপ, উদবিড়াল, মেছোবিড়াল ও বন বিড়াল ইত্যাদি। বন বিভাগের তথ্য মতে ২০১৮ সালের সর্বশেষ জরিপ অনুসারে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে বাঘের সংখ্যা ১১৪টি, এক থেকে দেড় লাখ হরিণ, ৪০ থেকে ৫০ হাজার বানর, ২০ থেকে ২৫ হাজার বন্য শূকর ও ২০ থেকে ২৫ হাজার উদবিড়াল রয়েছে ।
নদী-খাল: সুন্দরবনে নদী-খাল জালের মতো জড়িয়ে আছে। সুন্দরবনে ৪৫০টি ছোট বড় নদী-খাল রয়েছে। বনের প্রধান নদীগুলো হচ্ছে, পশুর, শিবসা, আড়পাঙ্গাসিয়া, শেলা, মরজাত, ভদ্রা, যমুনা, রায়মঙ্গল ও ভোলা ইত্যাদি।
পর্যাটন স্থান: গোটা সুন্দরবন জুড়ে রয়েছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য। এর মধ্যে করমজল, কটকা, কচিখালী, দুবলারচর, হিরণপয়েন্ট, কলাগাছিয়া, মানিকখালী, আন্দারমানিক ও দোবেকী এলাকায় পর্যটকরা বেশি ভ্রমণ করে থাকেন।
সুন্দরবনের কাছে ক্ষমা চাইলেন তারা : বন-বিনাশী অপরাধমূলক কর্মকা-ের দায়ে বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ সুন্দরবনের কাছে গণক্ষমা প্রার্থনার মধ্য দিয়ে সুন্দরবন দিবসের কর্মসূচি পালিত হয়েছে। সোমবার সকালে দিবসটি উপলক্ষে পূর্ব সুন্দরবনের ঢাংমারিতে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ, পশুর রিভার ওয়াটারকিপার, বাদাবন সংঘ ও ঢাংমারি ডলফিন সংরক্ষণ দলের আয়োজনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার, জলবায়ু সংকট সৃষ্টি, অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, পশুর নদীতে কয়লা-তেল ভর্তি জাহাজডুবি, জাহাজের বর্জ্য ও প্লাস্টিক দূষণ, বাঘ-হরিণ-পাখিসহ বন্যপ্রাণী হত্যা, বিষ দিয়ে মাছ নিধন, ডলফিন হত্যা, বৃক্ষ নিধনসহ মানবসৃষ্ট বন-বিনাশী কর্মকা-ের বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে এ ক্ষমা প্রার্থনা করা হয়।
সকাল ১১টায় গণক্ষমা প্রার্থনা কর্মসূচি পালনে আয়োজিত সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাপার বাগেরহাট জেলার আহ্বায়ক পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মো. নূর আলম শেখ। এ সময় অন্যান্যদের বক্তব্য রাখেন- বাদাবন সংঘের মোংলা এরিয়া ম্যানেজার অজিফা বেগম, বাপা নেতা পশুর রিভার ওয়াটারকিপার ভলান্টিয়ার ইস্রাফিল বয়াতি, বাপা নেতা নদীকর্মী হাসিব সরদার, ডলফিন সংরক্ষণ দলের স্টিফেন হালদার, শেখর রায়, বাপা নেত্রী মীরা বিশ্বাস, তরুণ মন্ডল প্রমুখ।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে নূর আলম শেখ বলেন, ‘মানুষের বন-বিনাশী কর্মকা-ের ফলে সুন্দরবনের জীববৈচিত্র্য হুমকিতে পড়েছে। মহাপ্রাণ সুন্দরবনকে বাঁচাতে এবং টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে বন-বিনাশী কর্মকা- থেকে মানুষ ও সরকারকে সরে আসতে হবে।’
সমাবেশে অন্যান্য বক্তারা বলেন, সুন্দরবন মায়ের মতো আমাদের বিপদ-আপদে আগলে রাখে। অথচ আমরাই আবার সুন্দরবনের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছি। তাই সুন্দরবনের কাছে ক্ষমা চাইতে এই কর্মসূচি পালন করছি।
গণক্ষমা প্রার্থনা কর্মসূচিতে ‘জীবাশ্ম জ্বালানি বন্ধ করো’, ‘সুন্দরবনের বাঘ-হরিণ হত্যা বন্ধ করো’, ‘পরিকল্পিত অগ্নিকা- বন্ধ করো’, ‘বিষ দিয়ে মৎস্য নিধন বন্ধ করো’সহ বিভিন্ন ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বনজীবীরা অংশগ্রহণ করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published.